অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : একই মসজিদে ৪৫ বছর ইমামতি করেছেন মৌলভী মো. মাইন উদ্দিন (৭০)। তাকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। বিদায়বেলায় অঝোরে কেঁদেছেন ইমাম। এ সময় আবেগঘন পরিস্থিতি তৈরি হয়। শুক্রবার (১২ মে) দুপুরে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে এই বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। সেখানে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে তাকে নগদ এক লাখ টাকা উপহার দেওয়া হয়।
মৌলভী মো. মাইন উদ্দিন ভোলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ উদ্দিন। ১৯৭৭ সালে তিনি নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে বসবাস শুরু করেন। তার বড় ছেলে মাওলানা জমির উদ্দিন এবং ছোট ছেলে হাফেজ মো. জহিরুল ইসলাম।
জানা যায়, ইমাম মো. মাইন উদ্দিন ১৯৭৭ সালে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের রমজান আলী সারেং জামে মসজিদে ইমামতি শুরু করেন। একই মসজিদে দীর্ঘ ৪৫ বছর ইমামতি করেছেন তিনি। ২০২২ সালে অসুস্থ হলে তার বড় ছেলে মাওলানা জমির উদ্দিন ইমামের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার এই অবসরকে স্মরণীয় করে রাখতে শুক্রবার (১২ মে) দুপুরে রমজান আলী সারেং জামে মসজিদের কমিটি ও স্থানীয়দের পক্ষ থেকে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিদায়ী ইমামের হাতে তুলে দেওয়া হয় এক লাখ টাকা।
চরক্লার্ক ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সাবেক সুপার মাওলানা রেজওয়ানুল বারী বলেন, ইমাম মাইন উদ্দিন সাহেব অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। কখনো বেতন পেয়েছেন আবার কখনো বিনা বেতনে খেদমত করেছেন। মহল্লার ছেলেদের কোরআন শিখিয়েছেন। অনেক আলেম তার ছাত্র। এমন সুন্দর বিদায় অনুষ্ঠান সুবর্ণচরে প্রথম।
ইমাম মাইন উদ্দিনের বড় ছেলে মাওলানা জমির উদ্দিন বলেন, বাবার এই মসজিদের স্মৃতিচারণ করতে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। যদিও আমি এখন বাবার দায়িত্ব পালন করছি। তিনি অনুষ্ঠানের শুরু থেকেই কান্নাকাটি করেছেন। উনার সঙ্গে আমরাও কান্না করেছি। আপনারা আমার বাবার ভুল ত্রুটি ক্ষমা করে দিয়েন।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আলী আকবর বাবুল বলেন, হুজুর আমাদের মসজিদে টানা ৪৫ বছর ইমামতি করেছেন। বর্তমানে কিছুটা অসুস্থ। উনার জন্য আমরা সামান্য উপহার দিয়েছি। মসজিদ কমিটি ও এলাকাবাসী সবাই মিলে এই উদ্যোগ নিয়েছি।
রমজান আলী সারেং জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মো. বেলায়েত হোসেন সেলিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ, চরক্লার্ক উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা নুর উল্যাহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
Leave a Reply